যে দেশের সী-বিচে নগ্ন হওয়ার আইন আছে

আয়ারল্যান্ডের দক্ষিণ ডাবলিনে চালু হতে যাচ্ছে হাক ক্লিফ বিচ। যাকে বলা হচ্ছে প্রথম ন্যুড বিচ বা নগ্ন সৈকত। 
অর্থাৎ সেখানে গিয়ে মানুষ নগ্ন হয়ে গোসল করার সুযোগ পাবে।
 উদ্যোক্তারা বলছেন, এই সৈকতে থাকবে সূর্য, বালু ও সমুদ্র কিন্তু থাকবে না কোনো বাথিং স্যুট।

এই নিয়ে যারা প্রচারণা চালিয়ে আসছিল সেই আইরিশ ন্যাচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের ফ্যাট গ্যালাঘের বলেন, ন্যাকেড বিচ আয়ারল্যান্ডে ধারণার চেয়েও বেশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। 
কারণ আইন-সম্মতভাবে নগ্ন সৈকতের দাবিতে কয়েক বছর ধরে প্রচারণা ছিল। 
এরপর একটি বিলের মাধ্যমে ২০১৭ সালে স্থানীয় কাউন্টি অফিস নগ্ন গোসলের পক্ষে লোকজনের সাক্ষর সংগ্রহ করে।

তবে ওই সৈকতে সেখানে শিশুদের উপস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কোনো সংগঠন। 
এ বিষয়ে গ্যালাঘের ভাষ্য, এটা মোটেই কোনো পারিবারিক সৈকত নয়। 
এখানে অবশ্যই শিশুদের নেয়া ঠিক হবে না। তাদের জন্য এটা বিপদজনক হবে। 
কোনো শিশুকে সেখানে নিলে নজর রাখতে হবে। 
কারণ সেটি সাধারণ কোনো সৈকত হবে না।

গ্যালাঘের আরও বলেন, "আমরা শুধু কোনো আকর্ষণীয় সৈকতে যাচ্ছি না। 
আমরা আমাদের গাড়ি রেখে সেখানে যাবো, সেখানে আরোহণ করবো, বালুতে সময় কাটাবো এবং অন্য কেউ হয়তো সেখানে যেতে চাইবে না।


  বিবিসির খবর।
(তথ্যটি সংগৃহীত)

রহস্যময় দ্বীপ সেন্টিনেল

সেন্টিনেল দ্বীপ
সেন্টিনেল দ্বীপ

পৃথিবীতে এমন কিছু স্থান রয়েছে যেগুলিকে আধুনিক প্রযুক্তি দিয়েও জয় করা সম্ভব হয়নি। এরকমই একটি দ্বীপ হলো সেন্টিনেল দ্বীপ। এই রহস্যময় দ্বীপটি বঙ্গপোসাগরের বুকে অবস্থিত। নৃতাত্বিকদের মতে, প্রায় ৬০ হাজার বছর পূর্বে দ্বীপটি তৈরি হয়েছিল। এই দ্বীপটির আয়তন ৭২ বর্গকিলোমিটার।

কাগজে কলমে দ্বীপটি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হলেও দ্বীপটির উপর ভারতের কোনো রকম কর্তৃত্ব নেই। ভারত সরকার বহুবার চেষ্টা করেও দ্বীপটি সম্পর্কে তেমন কিছু জানতে পারেনি। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, তারা দ্বীপটিতে ঢুকতেই পারেনি। এর একমাত্র কারণ হলো দ্বীপটিতে বসবাসরত অধিবাসীরা। দ্বীপটিতে কতোজন মানুষ বাস করে তার সঠিক কোনো হিসাবও পাওয়া যায়নি।
২০০১ সালে সরকারীভাবে দ্বীপটির ব্যাপারে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে সে চেষ্টা অসম্পূর্ণই রয়ে গেছে। অসম্পূর্ণ সেই পরিসংখ্যানে মাত্র ৩৯ জন বাসিন্দার উল্লেখ পাওয়া যায় দ্বীপটিতে। সেন্টিনেল দ্বীপের বসবাসরত অধিবাসীদের সেন্টিনাল জনগোষ্ঠী বলা হয়। এরা সভ্যতার আলো হতে দূরে থাকা এক শিকারী জনগোষ্ঠী। এরা ঠিক কোন ভাষায় কথা বলে তাও জানা যায়নি। ধারণা করা হয় এদের ভাষার সঙ্গে আন্দামানিক ভাষাগুলির মিল রয়েছে বলে জানা গেছে।

এই দ্বীপটির বাসিন্দারা প্রচণ্ড হিংস্র ও আদিম মানসিক্তার। এদের নিষ্ঠুরতার অনেক কাহিনীও শোনা যায়। শোনা যায়, ২০০৬ সালে দুই জেলে ভুলক্রমে নাকি ওই দ্বীপে ঢুকে পড়ে। দ্বীপের অধিবাসীরা তাদের মেরে ফেলে। জেলেদের উদ্ধারে পাঠানো হেলিকপ্টার হতে তাদের লাশ দেখা গিয়েছিল। এমনকি দ্বীপের অধিবাসীরা হেলিকপ্টার লক্ষ্য করেও তীর ছোড়া শুরু করে! যে কারণে জেলেদের উদ্ধার না করেই শেষ পর্যন্ত হেলিকপ্টারটি ফেরত আসতে বাধ্য হয়।
এই দ্বীপের বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে বহুদিন ধরে। ১৯৬৭ সালে প্রথম ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দ্বীপের বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা শুরু করে। ভারতের ট্রাইবাল ম্যানেজমেন্টের মহাপরিচালক টিএন পন্ডিতের নেতৃত্বে ওই সময় চেষ্টা শুরু করা হয়। যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা হিসেবে দ্বীপটির তীরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপহার রেখে আসা হতো। যেমন , খাবার- পোশাক ইত্যাদি।

তাতেও তাদের হিংস্র মানসিকতার কোনো রকম পরিবর্তন হয়নি। দ্বীপের কাছে কোনো নৌকা বা উপরে কোনো হেলিকপ্টার দেখলেই তীর, পাথর কিংবা বর্শা জাতীয় অস্ত্র ছুড়ে মারতো তারা। ১৯৯০ সালের দিকে মধ্য আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে বসবাসরত এরকমই একটি জনগোষ্ঠী “জারওয়া”দের সঙ্গে এক সংঘর্ষে বহিরাগত কিছু মানুষ প্রাণ হারান।
ওই ঘটনার পর ভারত সরকার সেন্টিনেল দ্বীপের বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা বন্ধ করে দেয়। আশেপাশের অন্তত ৩ মাইল এলাকার মধ্যে বাইরের পৃথিবীর মানুষের প্রবেশের ব্যাপারেও কড়াকড়ি আরোপ করে ভারতীয় সরকার।

ওই ঘটনার প্রায় এক শতাব্দী আগের কথা। ১৮৮০ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলেও এই দ্বীপটির বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেবার দ্বীপের ৬ জন বাসিন্দাকেও তুলে আনা হয়। এরমধ্যে চারজন ছিলো শিশু। প্রাপ্তবয়স্ক দু’জনকে দ্বীপ হতে আনার পরপরই মারা যায়। বাকি বাসিন্দাদের কিছুদিন রাখার পর কোনো তথ্য না পেয়ে তাদের ওই দ্বীপে রেখে আসা হয়।
জানা যায়, ২০০৪ সালের সুনামিতে দ্বীপটির ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এর কিছুদিনের মধ্যেই বাসিন্দারা আবারও সুনামির ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে। সুনামির কিছুদিন পর এক হেলিকপ্টার হতে দ্বীপের বাসিন্দাদের স্বাভাবিক কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।

বর্তমানে দ্বীপটি ভারত সরকারের অধীনে থাকলেও, দ্বীপের অধিবাসীদের জীবনযাত্রায় বহির্জগতের প্রভাবমুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্বীপটিতে যেতে বাধা না দেওয়া হলেও, ভারত সরকার বিশেষভাবে সতর্ক করে আসছে দ্বীপটিতে প্রবেশের ব্যাপারে। এক কথায় দ্বীপের বাসিন্দাদের কেও মাড়াতে চান না। তাদের মতো করেই বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চান না স্বয়ং ভারত সরকার। তাই বর্তমানে এই রহস্যময় দ্বীপটির বাসিন্দারা রয়েছেন তাদের মতো করেই। দুনিয়ার মানুষ অন্ধকারেই রইলো এই দ্বীপটিকে নিয়ে।

এক রহস্যময় দ্বীপ ‘টিপিটোওটি হিনুয়া’র গল্প

টিপিটোওটি হিনুয়া
টিপিটোওটি হিনুয়া
নেদারল্যান্ডের নৌ সেনাপতি জ্যাকব রজারভিন আবিষ্কার করেছিলেন জনবিচ্ছিন্ন এই দ্বীপ। সেটি আজকের কথা নয় সেই ১৭২২ খ্রিস্টাব্দের ৫ এপ্রিলের কথা। ওইদিন ছিল ইস্টার সানডে। যে কারণে তিনি এই দ্বীপটির নাম দেন ‘ইস্টার আইল্যান্ড’। এই দ্বীপটি চিলিতে অবস্থিত। কিন্তু এতোবছরেও দ্বীপটির রহস্য ভেদ হয়নি এখনও।


স্থানীয়রা এই দ্বীপটিকে বলে ‘টিপিটোওটি হিনুয়া’, যার অর্থ দাঁড়ায় পৃথিবীর কেন্দ্রস্থল। এই দ্বীপটি অনেকটা ত্রিকোণ আকৃতির আগ্নেয় শিলা দিয়ে তৈরি। দ্বীপটির আয়তন লম্বায় ২৮.৬ কিলোমিটার আর চওড়ায় ১২.৩ কিলোমিটার।

নেদারল্যান্ডের নৌ সেনাপতি জ্যাকব রজারভিন দ্বীপটিতে নামার পর অবাক হয়ে যান ছড়ানো-ছিটানো শত শত মূর্তি দেখে! তিনি ধারণা করেছিলেন সামুদ্রিক ঝিনুকের খোলের চুর্ণের সঙ্গে বিশেষ এক ধরনের কাদার প্রলেপ দিয়ে মূলত মূর্তিগুলো তৈরি করা হয়েছে। তবে পরবর্তী সময়ে তার সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। সব মূর্তিগুলোই নিরেট কালো ও লালচে পাথরে খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন আকৃতির মূর্তিগুলোর উচ্চতা ৩ হতে ৩০ ফুট পর্যন্ত। এইসব এক একটা মূর্তির ওজন আবার কয়েক টন।

গবেষণা হতে আরও জানা যায়, দ্বীপটিতে আদিবাসীদের বসবাস থাকলেও তাদের দ্বারা ওই মূর্তি বানানো কখনও সম্ভব ছিল না। জ্যাকব রজারভিনের ইস্টার আইল্যান্ডের মূর্তিগুলোর উপাদান ও গঠন শিল্পের সঙ্গে মিসরের পিরামিডের যথেষ্ট মিল রয়েছে। প্রায় ৭ হাজার বছর পূর্বের পিরামিডের সঙ্গে মূর্তিগুলোর মিল সত্যিই অবাক করে দেয়। ঐতিহ্যের কারণে ইউনেস্কো এই দ্বীপটিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে এই দ্বীপের প্রকৃত রহস্য এখনও সবার অজানা।